হযরত আলি (রা.) বীরত্ব ও রাষ্ট পরিচালনাঃ

হযরত আলি (রা.) ছিলেন রাসুল(স.)এর চাচাতো ভাই। তিনি ৬০০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহন করেন।তাঁর পিতার নাম আবু তালিব, তিনি ছোটদের মধ্যে প্রথম ১০ বছর বয়সে মক্কার মুসলমান।তিনি [আশারা-ই-মুবাশ্ শারার] জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন সাহাবির একজন এবং ইসলামের চতুর্থ খলিফা।ছোটকাল থেকেই জ্ঞানেরপ্রতি ছিলো তাঁর প্রবল আগ্রহ। তাই তিনি সর্বদা রাসুলস(স.) এর সাথেসাথে থাকতেন।রাসুল(স.)এর প্রতি তাঁরভক্তি ও শ্রদ্ধা ছিলো অসীম। রাসুল (স.)তিনি তাঁর অতি আ-দরের কন্যা ফাতিমাকে হযরত আলি (রা.) এর সাথে বিবাহ দেন। হযরত আলি (রা.) খুব নির্ভিক ও সাহসী ছিলেন।রাসুল(স.)হিজরতের সময় তাঁকে তাঁর বিছানায় রেখে যান। রাসুল(স.) এর কাছে আমানত রাখা সম্পদ মূল মালিকের কাছে ফেরত দেওয়ার দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। এতে তাঁর জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এরপরও তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।।।।



....
হযরত আলি(রা.)ছিলেন একজন অসাধারন বীরযোদ্ধা তাঁর বীরত্বের কারণে বদরের যুদ্ধে [জুলফিকার] নামক তরবারি উপহার পান। আর খায়বার যুদ্ধে [কামুস] দুর্গ বিজয়ের পর রাসুল (স.)তাঁকে [আসাদুল্লাহ] আল্লাহর সিংহ উপাধি দেন।।। তিনি হুদায়বিয়ার সন্ধির লেখক ছিলেন এবং মক্কা বিজয়ের সময় মুসলিম বাহিনীর পতাকা বহনকারী ছিলেন।।।।।।।। হযরত আলি(রা.) কুরআনের তাফছির, হাদিসের বিশ্লেষন এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর গভীর জ্ঞান ছিলো।।। আরবি ভাষার ব্যাকারন রচনায় তাঁর প্রধান ভুমিকা ছিলো। তাঁর জ্ঞানের ব্যাপারে মহানবি (স.) বলেছেন,,,,, ['''আমি জ্ঞানের শহর''' ''আর আলি(রা.) তাঁর দরজা''] (মুস্তাদরাক হাকিম) হযরত আলি (রা..........) রচিত (দেওয়ানে আলি) আলির কাব্য সংকলন আরবি সাহিত্যের অমুল্য সম্পদ।।।।। তিনি তাঁর শাসনামলে মসজিদে মসজিদে জ্ঞান চর্চার ব্যবস্থা করেন।।।।
....
৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দে হযরত উছমান(রা.)শাহাদত বরন করেন। এরপর মুসলিমদের মতামতের ভিত্তিতে হযরত আলি (রা.) মুসলিম জাহানের চতুর্থ খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি অনেক সমস্যার মুখোমুখি হন। অসাধারন মেধা, সাহসীকতা ও যগ্যতা দিয়ে দৃঢ়তার সাথে এগুলো সমাধা করেন।।।।।।
....
হযরত আলি(রা.)এর রাষ্ট পরিচালনার সময় মুসলিমরা চরম উপদলীয় কোন্দলে লিপ্ত হওয়ায় ইসলামের ইতি-সের চরম সংকটকার চলছিলো। তিনি সান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহন করেন। তিনি রাজনৈতিক জোট (Coalition) গঠন করেন।।।।।।। এবং প্রশাসনে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি (Nepotism) সম্পূর্ণভাবে পরিহার করেন।তিনি অভিজাত ভূমি মালিকদের নিকট থেকে ভূমি পুনরুদ্ধার করেন এবং আদায়কৃত কর ও যুদ্ধলব্ধ সম্পদ মুসলিম নাগরিকগনের মধ্যে সমভাবে বন্টনের ব্যবস্থা গ্রহন করেন। যেহেতু তখন প্রায় সকল মুসলমানিই বেদুইন ও কৃষক ছিল। সে কারনেই তিনি ভুমি ও কৃষি উন্নয়নের বিষয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন।
....
হযরত আলি (রা.)এর প্রশাসনিক আদর্শ প্রতিফলিত হয়েছে মিসরের গভর্নর মালিক আল-আশতারের কাছে প্রেরিত নির্দেশনামূলক একটি চিঠিতে, তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, "তুমি তোমার প্রজাদের জন্য অন্তকরনে ক্ষমা ভালবাসা ও দয়া প্রবিষ্ট করো। তাদেরকে সহজে শিকারযোগ্য মনে করে তাদের সম্মুখে পেটুক জন্তুর মতো হয়ো না। কেনোনা তাঁরা দু ধরনেরঃ হয়তো তাঁরা তোমার ধর্মীয় ভাই নয়তো তাঁরা সৃষ্টিগতভাবে তোমার সমান। তাঁরা অসতর্কভাবে ভূল করতে পারে। তুমি প্রজাদের চাহিদাগুলো পুরন করবে আল্লাহ তাই প্রত্যাশা করেন এবং তিনি তাঁদের দ্বারা তোমাকে পরিক্ষা করছেন। উপযুক্ত নির্দেশনাকে ইতিহাসে ইসলামি শাসনের আদর্শ সংবিধান। (Ideal Constitution of Islamic Governance) হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তিনি প্রায় ৬ বছর খিলাফতের দায়িত্ব পালন করেন। অবশেষে ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে ইবনে মুলজাম নামক এক পথভ্রষ্ট খারেজির হাতে শাহাদত বরন করেন। তখন তিনি নামাযরত অবস্থায় ছিলেন। রাসুল(স.) তাঁর ব্যাপারে বলেছেন- সে [আলি (রা.)] প্রত্যেক মুমিনের বন্ধু। আমাদের দেশেও যেনো এমন সৎ ও নির্ভিক ব্যক্তি রাষ্ট পরিচালনা করেন,,
আমিন....

No comments

Powered by Blogger.