ধূমপান ছাড়ার ১৩ কৌশল || যা আপনাকে ধূমপান ছাড়তে সহায়তা করবে
প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না
লেখক: ডা. মোড়ল নজরুল ইসলাম | সম্পাদনা: আবদুল্লাহিল হাদী বিন আবদুল জলীল
১. প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন কেন ধূমপান ছাড়া আপনার জন্য জরুরি। অর্থাৎ কি কারণে ধূমপান ছাড়তে চান। যেমন ক্যান্সার ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে।
২. কোন ধরনের থেরাপি বা বিকল্প মেডিকেশন ছাড়া ধূমপান ছাড়া ঠিক নয়। কারণ সিগারেটের নিকোটিনের ওপর ব্রেইন অনেক ক্ষেত্রে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ছেড়ে দিলেই নানা উপসর্গ শুরু হয়। তাই সিগারেটের বিকল্প থেরাপির কথা চিন্তা করতে হবে।
৩. নিকোটিনের বিকল্প গাম, লজেন্স ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।
৪. নিকোটিনের বিকল্প ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।
৫. একা একা ধূমপান না ছেড়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্য (যদি ধূমপায়ী থাকেন), বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীদের উত্সাহিত করে একসঙ্গে ধূমপান ত্যাগের ঘোষণা দিন।
৬. মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে হালকা ম্যাসাজ নিন।
৭. অ্যালকোহল পরিহার করুন।
৮. মনোযোগ অন্যদিকে নিতে ঘরের কাজ অথবা অন্য যে কোন কাজ করতে চেষ্টা করুন।
৯. ধূমপান ত্যাগের জন্য বার বার চেষ্টা করুন। একবার ছেড়ে দিলে দ্বিতীয় বার আর ধূমপান করবেন না।
১০. নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
১১. প্রচুর পরিমাণ সবুজ শাক-সবজি ও রঙিন ফলমূল খান।
১২. ধূমপান বন্ধ করে যে আর্থিক সাশ্রয় আপনার হবে তার একটা অংশ জনকল্যাণ অথবা হালকা বিনোদনে ব্যয় করুন।
১৩. আর ধূমপান ছাড়ুন বন্ধু-বান্ধব বা প্রেমিক-প্রেমিকাকে খুশি করার জন্য নয়, বরং আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্যই এটা করেছেন। এমন জোরালো অবস্থান নিন।
ধুমপান হারাম যে সব কারণে:
১) এটি বিভিন্ন রোগের কারণ ও স্বাস্থের জন্য ক্ষতি কারক। নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হারাম। “…নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না।”[বাকারা: ১৯৫]২) এটি মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ। আর আত্মহত্যা করা হারাম। “আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না।” [নিসা: ২৯]
৩) এর মাধ্যমে ধুমপায়ী নিজের যেমন ক্ষতি করে অন্যের ক্ষতি করে। আবু সাঈদ আল-খুদরি (রা) রাসূল(সা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে,” নিজের ক্ষতি স্বীকার করবেনা, অন্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবেনা।” (মুয়াত্তা মালিক; হাদিস নং ৩২; হাদীসটির ইসনাদ সহীহ)
৪) অর্থ অপচয় হয়। “অপচয়কারী শয়তানের ভাই।” [সূরা ইসরা: ২৭]
৫) মুসলিম-অমুসলিম সকলেই একমত যে নিকোটিন একটি ক্ষতিকারক বস্তু। আল্লাহ তায়ালা নাপাক জিনিস ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। “…তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন যাবতীয় নাপাক ক্ষতিকারক বস্তুসমূহ” [আরাফ: ১৫৭]
৬) এটি একটি প্রকাশ্য পাপ। আর প্রকাশ্যে পাপাচার করার শাস্তি আরও বেশী।
৭) আল্লাহ নির্দেশের সরাসরি বিরোধিতা এটি। কেননা, আল্লাহ তায়ালা পবিত্র ও হালাল জিনিস
ভক্ষণ করতে আদেশ করেছেন। “হে ঈমানদারগণ, তোমরা পবিত্র বস্তু সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসাবে দান করেছি এবং শুকরিয়া আদায় কর আল্লাহর, যদি তোমরা তাঁরই বন্দেগী কর।” [সূরা বাকারা: ১৭২]
৮) তামাক নেশা দ্রব্যের অন্তর্ভূক্ত। কম হোক বা বেশী হোক সকল প্রকার নেশা দ্রব্য ইসলামে হারাম। [সূনানে ইবনে মাজাহ, ৩য় খন্ড, অধ্যায়ঃ ৩০, হাদীস নংঃ ৩৩৯২)
৯) ধূমপানের মধ্যে রয়েছে জাহান্নামী খাদ্যের বৈশিষ্ট্য। “এটা তাদের পুষ্টিও যোগাবেনা ক্ষুদাও নিবারন করবেনা।” [সূরা আল-গাশিয়াহঃ ৭]
No comments