হযরত সাঈদ ইবনে আমের আল জুমাহী (রাঃ) এর জীবনী ।। নবীদের জীবনী
হযরত সাঈদ ইবনে আমের আল জুমাহী (রাঃ) এর জীবনী ।। নবী জীবনী
হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) এর সাহাবী হযরত খোবাইব (রাঃ) কে বিশ্বাকঘাতকতার মাধ্যমে আটক করে শুলিতে চড়িয়ে হত্যার জন্য আরব নেতৃবৃন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে চারিদিকে দণ্ডায়মান। সেই শোভাযাত্রার অতি সম্মুখে অগ্রগামী ছিলেন যুবক সাঈদ। তারা খোবাইবকে হত্যার মাধ্যমে বদরের যুদ্ধে নিহত কুরাইশদের বদলা নিতে চায়। যখন তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন খোবায়েবের শেষ চাওয়া মোতাবেক তাঁকে দু’রাকাত নামায আদায়ের সুযোগ দিয়েছিল। খোবাইব কাবামূখী হয়ে দু’রাকাত সালাত আদায় করছেন। হায়! কতইনা সুন্দর ঐ দু’রাকাত সালাত। কিন্তু অতি দ্রুত শেষ হয়ে গেল মধুর দৃশ্যের সেই দুটি রাকাত। অতঃপর সে দেখল খোবাইব কুরাইশ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলছে, যদি তোমরা এই ধারণা না করতে যে, ‘মৃত্যুর ভয়ে আমি সালাত লম্বা করছি’ আল্লাহর শপথ তাহলে আমি নামায আরো দীর্ঘায়িত করতাম।
অতঃপর সাঈদ অত্যান্ত নিকট থেকে দেখতে পেল কুরাইশরা জীবন্ত বন্দী খোবাইবের দেহে শূঁচালো বর্শার শলা দিয়ে খুুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শরীর থেকে চামড়া মাংস খুলছে। উপর্যুপুরি আঘাত করে একের পর এক দেহাংশ কেটে অঙ্গ বিকৃত করতে করতে বলছে, খোবায়েব, তুমি কি এ প্রস্তাব পছন্দ করবে যে, ‘মুহাম্মদ তোমার স্থলে হোক, বিনিময়ে তুমি মুক্ত হয়ে যাও?’ বিক্ষত সমস্ত শরীর টপ টপ করে রক্ত ঝরছে আর নেতিয়ে পড়া মৃত প্রায় দেহটি গর্জে উঠে বলছে, “আল্লাহর কসম! আমি এ প্রস্তাব পছন্দ করিনা যে, আমি আমার পরিবার পরিজন ও সন্তানাদি নিয়ে নিরাপদে শান্তিতে থাকি আর মুহাম্মদ (সাঃ) কে একটি কাঁটার আঁচড় দেয়া হবে।” এক কথা বলার সাথে সাথে উন্মুক্ত ময়দান থেকে হাঁক দেয়া হলো “তাকে হত্যা করে ফেলো, তাকে হত্যা করে ফেলো।”
আজ তোমাদের এমন এক সাহাবীর কথা শোনাবো, যার নাম হলো- হযরত সাঈদ ইবনে আমের আল জুমাহী (রাঃ)। যার ঘটনা শুনে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারবো। আর বুঝতে পারবো আল্লাহর নবী (সাঃ) এর সাহাবীদের মতাদর্শ ও জীবন প্রবাহ কেমন ছিল। আজো যদি আমরা সেই আদর্শ গ্রহণ করতে পারি তাহলে আমাদের জীবন ও সমাজ পাল্টে যাবে। তাহলে একটু পিছন থেকেই বলতে হয়।
হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) এর সাহাবী হযরত খোবাইব (রাঃ) কে বিশ্বাকঘাতকতার মাধ্যমে আটক করে শুলিতে চড়িয়ে হত্যার জন্য আরব নেতৃবৃন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে চারিদিকে দণ্ডায়মান। সেই শোভাযাত্রার অতি সম্মুখে অগ্রগামী ছিলেন যুবক সাঈদ। তারা খোবাইবকে হত্যার মাধ্যমে বদরের যুদ্ধে নিহত কুরাইশদের বদলা নিতে চায়। যখন তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন খোবায়েবের শেষ চাওয়া মোতাবেক তাঁকে দু’রাকাত নামায আদায়ের সুযোগ দিয়েছিল। খোবাইব কাবামূখী হয়ে দু’রাকাত সালাত আদায় করছেন। হায়! কতইনা সুন্দর ঐ দু’রাকাত সালাত। কিন্তু অতি দ্রুত শেষ হয়ে গেল মধুর দৃশ্যের সেই দুটি রাকাত। অতঃপর সে দেখল খোবাইব কুরাইশ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলছে, যদি তোমরা এই ধারণা না করতে যে, ‘মৃত্যুর ভয়ে আমি সালাত লম্বা করছি’ আল্লাহর শপথ তাহলে আমি নামায আরো দীর্ঘায়িত করতাম।
অতঃপর সাঈদ অত্যান্ত নিকট থেকে দেখতে পেল কুরাইশরা জীবন্ত বন্দী খোবাইবের দেহে শূঁচালো বর্শার শলা দিয়ে খুুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শরীর থেকে চামড়া মাংস খুলছে। উপর্যুপুরি আঘাত করে একের পর এক দেহাংশ কেটে অঙ্গ বিকৃত করতে করতে বলছে, খোবায়েব, তুমি কি এ প্রস্তাব পছন্দ করবে যে, ‘মুহাম্মদ তোমার স্থলে হোক, বিনিময়ে তুমি মুক্ত হয়ে যাও?’ বিক্ষত সমস্ত শরীর টপ টপ করে রক্ত ঝরছে আর নেতিয়ে পড়া মৃত প্রায় দেহটি গর্জে উঠে বলছে, “আল্লাহর কসম! আমি এ প্রস্তাব পছন্দ করিনা যে, আমি আমার পরিবার পরিজন ও সন্তানাদি নিয়ে নিরাপদে শান্তিতে থাকি আর মুহাম্মদ (সাঃ) কে একটি কাঁটার আঁচড় দেয়া হবে।” এক কথা বলার সাথে সাথে উন্মুক্ত ময়দান থেকে হাঁক দেয়া হলো “তাকে হত্যা করে ফেলো, তাকে হত্যা করে ফেলো।”
অতঃপর সাঈদ ইবনে আমের আল জুমাহী খোবায়েব (রাঃ) এর দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখলেন, খোবায়েব আকাশের পানে তাকিয়ে বলছে, “হে আল্লাহ, আপনি এদের সংখ্যা গণনা করে রাখুন, এদের শক্তি খর্ব করে দিন এবং এদের একজনকেও ছেড়ে দিবেন না। একথা বলেই খোবাইব শেষ নিশ্বাঃস ত্যাগ করে শহীদ হয়ে গেলেন তখনও এত অসংখ্য তরবারীও বর্শাঘাত তার উপর চলছিল যা গণনা করা কারো পক্ষে সম্ভব ছিলনা। কুরাইশরা সময়ের ব্যবধানে এই করুণ দৃশ্য ভুলে গিয়েছে। কিন্তু সাঈদ এক মুহুর্তের জন্যও ভুলতে পারেননি। তিনি তাকে ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে দেখতেন, জাগ্রত অবস্থায় ধ্যানের জগতে প্রত্যক্ষ করতেন।
তাঁর প্রতিচ্ছবি যেন সামনে ভাসে, দু'চোখে ভেসে উঠে খোবায়েরের বিনীত চিত্তে আদায় কৃত দু’রাকাত নামা আদায়ের মধূর দৃশ্য। তার কানে যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছে খোবায়েরের করুণ কান্না মিশ্রিত বদ দোয়া। খোবায়েরের মৃত্যু সাহাবী সাঈদ ইবনে আমেরকে এমন কতিপয় বিষয় শিক্ষা দিন যা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
১. প্রকৃত জীবন হলো একটি দৃঢ় বিশ্বাসের নাম, মৃত্যু পর্যন্ত ঐ বিশ্বাসের পথে জিহাদ করা।
১. প্রকৃত জীবন হলো একটি দৃঢ় বিশ্বাসের নাম, মৃত্যু পর্যন্ত ঐ বিশ্বাসের পথে জিহাদ করা।
২. দৃঢ় ঈমান অনেক বিস্ময়কর কিছু করতে পারে এবং অনেক অলৌকিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
৩. যে লোকটিকে তার সাহাবীরা অত্যাধিক ভালোবাসে তিনি হলেন এমন সত্য নবী, যিনি আসমান থেকে সাহায্য প্রাপ্ত।
আল্লাহ সাঈদ ইবনে আমেরের অন্তরকে ইসলাম গ্রহণের জন্য প্রশস্ত করে দেন। ফলে একদা সে এক জন- সমারোহে দাঁড়িয়ে ‘কোরাইশদের অন্যায়, পাপাচারের সাথে তার সংশ্লিষ্টহীনতা ও মূর্তিপূজা থেকে নিজকে মুক্ত ঘোষণা করে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন।
আমাদের সাথে থাকুন সবসময়।
No comments