হযরত উম্মে ওয়ারাকা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.) মহিলা সাহাবিদের জীবনি

হযরত উম্মে ওয়ারাকা বিনতে আবদুল্লাহ (রা.)



ঐতিহাসিকরা তার আসল নাম উল্লেখ করেননি। কুনিয়াত উম্মে ওয়ারাকা। তিনি ছিলেন আনছারী মহিলা ঐতিহাসিক ইবনুল আসীর এবং আল্লামা ইবনে আবদুল বার তার কোন বংশধারাও উল্লেখ করেন নি। তারা বলেন, এ ব্যাপারে মতভেদ দেখা যায়। অবশ্য হাফেয ইবনে হাজার এছাবাহ গ্রন্থে তার বংশধারা উল্লেখ করেছেন – উম্মে ওয়ারাকা বিনতে আবদুল্লাহ ইবনে হারেস ইবনে উয়াইমির ইবনে নওফল। ইবনে হাজারের মতে তাকে উম্মে ওয়ারাকা বিনতে নাওফলও বলা হতো। খুব সম্ভব হিজরতের পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নবীজীর হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। বদর যুদ্ধের প্রস্তুতিকালে উম্মে ওয়ারাকা নবীজীর খেদমতে নিবেদন করে বলেন, আমাকেও অংশ গ্রহণের অনুমতি দেয়া হোক। আমি আহত এবং রোগাক্রান্তদের সেবা করবো। হতে পারে আল্লাহ্ আমাকে শাহাদাত নছীব করবেন। নবীজী বললেন, তুমি গৃহেই থাক, আল্লাহ তোমাকে সেখানেই শাহাদাত দেবেন। তিনি যেহেতু কুরআন শরীফ পড়তে জানতেন, তাই নবীজী তাকে গৃহেই স্ত্রীদের ইমাম করেন। নবীজীর অনুমতিক্রমে একজন মোয়াজ্জেনও নিয়োগ করা হয়। তিনি একজন গোলাম এবং একজন দাসীকে কথা দিয়েছিলেন যে, আমার পর তোমরা আজাদ হবে। তারা বিদ্রোহের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সময় আসার পূর্বেই প্রতিশ্রুতির সুযোগ নিতে চায়। এক রাত্রে চাদর মুড়ি দিয়ে তারা তার ইহলীলা সাঙ্গ করে। এ ঘটনার পর তার দু’জনই পলায়ন করে। ভোরে হযরত উমর (রা.) তার ঘরে গিরে দেখেন ঘরের এক কোণে চাদর মুড়ি দিয়ে পড়ে রয়েছেন। তিনি আক্ষেপ করে বললেন, আল্লাহ্ এবং তার রাসূল ঠিকই বলেছেন। অতঃপর মসজিদে এসে মিনারে দাঁড়িয়ে এ খবর প্রচার করে গোলাম এবং দাসীকে গ্রেফতার করে আনার নির্দেশ দেন। তাদেরকে গ্রেফতার করে আনা হলে খলীফাতুল মুসলেমীনের নির্দেশে উভয়কে শুলীবিদ্ধ করা হয়। এরা হচ্ছে প্রথম মুসলমান, যাদেরকে মদীনায় শুলী বিদ্ধ করা হয়। নবীজী হযরত উম্মে ওয়ারাকাকে দেখতে তার গৃহে গমন করতেন। এবং তাকে শহীদা বলে ডাকতেন। এজন্য হযরত উমর (রাঃ) তার শাহাদাতের পর বললেন, রাসূলাল্লাহ্ (সাঃ) ঠিকই বলতেন, চলো শহীদার গৃহে যাই। ঐতিহাসিক ইবনে সা’আদ উল্লেখ করেন যে, হযরত উম্মে ওয়ারাকা নবীজীর কাছ থেকে হাদীসও বর্ণনা করেছেন। অবশ্য অন্যান্য জীবন চরিত গ্রন্থে এর কোন উল্লেখ নেই।

No comments

Powered by Blogger.